Friday, December 26, 2014

নারীকে পুরুষের অধীনস্থ করে রাখার জন্যই কি 'বিয়ে' নামক প্রতিষ্ঠানের উদ্ভব হয়েছিল?

আদিম সাম্যবাদী সমাজে নারী পুরুষের মধ্যে কোন বৈষম্য ছিলনা। সে সমাজে না ছিল 'বিয়ে' নামক কোন প্রতিষ্ঠান, না ছিল ব্যক্তিগত সম্পত্তির ধারনা। সমাজের নেতৃত্ব ছিল নারীদের হাতে। নারীদের কেন্দ্র করেই তৎকালীন সমাজ পরিচালিত হত।

সন্তান ধারন করে মানবজাতির অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখায় প্রধান ভূমিকা পালনের জন্য মূলত নারীকে বিশেষ সম্মানের চোখে দেখা হত।

সে সময়ে 'বিয়ে' নামক কোন প্রতিষ্ঠান না থাকায় এবং নারী-পুরুষ 'বহুগামী' হওয়ায় পিতৃত্ব নির্ধারন জটিল ছিল। ফলে সন্তান নারীর পরিচয়েই বেড়ে উঠত। এর ফলে নারী কে কেন্দ্র করে সমাজ পরিচালিত হত ও নারীরা সমাজে বিশেষ মর্যাদা ভোগ করত।

সময়ের পরিক্রমায় ব্যক্তিগত সম্পত্তির ধারনা উদ্ভব হয়। ফলশ্রুতিতে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে সম্পত্তির মালিকানা হস্তান্তরের জন্য পুরুষের জন্য সন্তানের পরিচয় জানা আবশ্যক হয়ে ওঠে।

এর ফলে বিয়ে নামক সামাজিক চুক্তির উদ্ভব হয়। আর এর মাধ্যমে নারী তার ঐতিহাসিকভাবে প্রাপ্ত স্বাধীনতা হারায়। বিয়ে নামক চুক্তির মাধ্যমে নারীকে পুরুষের অধীনস্থ করে রাখার প্রক্রিয়া শুরু হয়।

এছাড়া মাতৃত্বজনিত কারনে অর্থনৈতিক কাজে নারীর অংশগ্রহণ সীমিত হওয়ার ফলে নারী পুরুষের চেয়ে অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পরে।

ইতিহাসের আলোকে নারী জাতির পিছিয়ে পড়ার কারন খুঁজতে গেলে দেখা যায় যে, ব্যক্তিগত সম্পত্তির উদ্ভব ও অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া,পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা, নারীবিদ্বেষী ও পুরুষবান্ধব ধর্ম, সংস্কৃতি, ও আইন কানুন নারীকে শৃঙ্খলিত করে রাখতে বড় ভূমিকা রেখেছে।

No comments:

Post a Comment