Thursday, April 30, 2015

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সমাজবিজ্ঞান বিভাগের দুই উজ্জ্বল নক্ষত্র!

এই নক্ষত্রদ্বয়ের মধ্যে প্রথম জন হলেন, উপমহাদেশের অন্যতম ও বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ সমাজবিজ্ঞানী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এ আই মাহবুব উদ্দীন স্যার। যিনি সমাজবিজ্ঞান বিভাগে পড়তে আসা নবীন ছাত্রছাত্রীদের ট্রাডিশনাল চিন্তাধারাকে ভেংগে চুরমার করে দিয়ে সমাজবিজ্ঞান বোঝার জন্য প্রস্তুত করে দেন।

সমাজের সাধারন সদস্য হিসেবে ট্রাডিশনাল বিশ্বাস, নীতি-নৈতিকতার ধারনা নিয়ে সমাজবিজ্ঞান পড়তে আসা নবীন ছাত্রছাত্রীদের চিন্তার ধাঁধা ও দ্বন্দ্বে ফেলে দেয়া, চমৎকার বাচনভঙ্গির অধিকারী ও প্রচারবিমুখ এই সমাজবিজ্ঞানীকে বেশিরভাগ প্রথম সেমিস্টারের স্টুডেন্টরা বুঝতে না পারলেও সময়ের পরিক্রমায় স্যার প্রায় সব ছাত্রছাত্রীদের হৃদয়ে প্রিয় শিক্ষক হিসেবে স্থান করে নেন।

সমাজবিজ্ঞান বিভাগের আরেক উজ্জ্বল নক্ষত্র, আমার অসম্ভব প্রিয় একজন ব্যক্তিত্ব হলেন প্রফেসর ড. এ এস এম আমানউল্লাহ স্যার। স্যারের সম্পর্কে বলতে গেলে বিশাল এক প্রবন্ধ লিখতে হবে। সংক্ষেপে বলি, জাতিসংঘ থেকে শুরু করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ইউএনএইডস সহ অসংখ্য আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য বিষয়ক নানা প্রকল্পে উপদেষ্টা ও বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করছেন এই সমাজবিজ্ঞানী।

বাংলাদেশে এইডস নিয়ে যত কাজ হয়েছে তার সিংহভাগের পিছনে স্যারের নেতৃত্ব ও অবদান রয়েছে। হার্ভার্ড, এমআইটি সহ অসংখ্য বিশ্ববিখ্যাত জার্নালে প্রকাশিত অসংখ্য পেপারের লেখক, ছাত্রছাত্রীদের মেন্টর এই স্যার প্রতিদিন কমপক্ষে এক গ্যালোন লাফিং গ্যাস নিয়ে ক্লাসে প্রবেশ করেন। ;) দীর্ঘ দুই ঘন্টা ব্যাপী স্যারের ক্লাসে বোরিং হওয়াতো দুরের কথা স্যারের চমৎকার অভিনয় ও লেকচারে হাসতে হাসতে সবার পেটে খিল ধরে যায়।

প্রায় পাঁচ হাজার ডাক্তার ও হেলথ প্রফেশনালকে ট্রেনিং দেয়া গ্লোবাল সিটিজেন এই স্বাস্থ্য সমাজবিজ্ঞানী বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বড় সামাজিক ট্যাবু সেক্স, সমকামিতা, ট্রান্সজেন্ডার ও যৌনস্বাস্থ্য নিয়ে খোলামেলা কিন্তু মার্জিত ও মজার ভংগিতে আলোচনা করে লজ্জাবতী ও অপ্রাপ্তবয়স্ক ছাত্রছাত্রীদের ম্যাচুরিটি এনে দেন। ;) এভাবে সমাজের অসংখ্য বিচিত্র বিষয়কে সমাজবিজ্ঞানের চোখ দিয়ে দেখার ও বিশ্লেষণ করার যোগ্যতা তৈরি করে দেন।

Thursday, April 23, 2015

এলোমেলো ভাবনা (৫)

(১) আত্মনির্ভরশীল হওয়ার পরিবর্তে "বিয়ে" যদি হয় নারীদের জীবনের প্রধান স্বপ্ন ও লক্ষ, তাহলে আর যাই হোক নারী মুক্তি সম্ভব না।

(২) কারো প্রতিশ্রুতির উপর ভরসা করে নিশ্চিন্তে বসে থাকার মত বোকামী দ্বিতীয়টি আর নাই। স্বার্থপরতার এই যুগে কেউ কাউকে সাহায্য করে না; নিজের কাজ নিজেকেই করে নিতে হয়।

(৩) পূজিবাদের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য ও অবশ্যম্ভাবিতা হচ্ছে সামাজিক অসমতা। এই অসমতাই তীব্র আকার ধারন করে একদিন এর পতন ডেকে আনবে। সামাজিক অসমতার পরিমান যত তীব্র হবে, পুঁজিবাদের পতনও ততো নিকটে আসবে।

(৪) মানুষ খুবই একটা অদ্ভুত প্রানী। সে তার নিজের আচরনে সবসময় পরার্থপরতা খুঁজে পায় কিন্ত কখনো নিজের স্বার্থপরতা দেখতে পায় না।

(৫) মানব জীবনে 'বলা' কথার চেয়ে 'না বলা' কথার পরিমানই বেশি।

(৬) ফেসবুকে কোন পোস্টে লাইক দেয়া মানে সবসময় পোস্টের বক্তব্যের সাথে সহমত পোষণ করা নয়। লাইক দেয়া মানে স্টাটাসটা নজরে পড়েছে তা জানান দেয়া এবং লেখালেখি চালিয়ে যাওয়ার জন্য উৎসাহ প্রদান করা।

(৭) বেনিফিট অব ডাউট কখনো সবল ও সংখ্যাগুরুদের প্রাপ্য হতে পারেনা। এটা সবসময় দুর্বল ও সংখ্যালঘুদের অধিকার।

(৮) সমাজে যে কোন অস্থিরতা বা গোলমাল সৃষ্টি হলে তার প্রথম শিকার হয় নারী এবং শিশু। যদিও এইসব অস্থিরতা সৃষ্টির পিছনে প্রধানত দায়ী থাকে পুরুষ।

(৯) প্রত্যেক কাজেরই একটা সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে। তাই উপকার কখনো বিফলে যায় না। একদিন সেটা কোন না কোন ভাবে ফিরে আসবেই।

(১০) কখনো হতাশ হতে নেই। মূল্যবান কিছু নিমিষেই অর্জিত হয় না। তার পিছনে ধৈর্য, শ্রম ও সময় দিতে হয়।

Monday, April 20, 2015

~ আত্বরক্ষার কৌশল অর্জনই নারীকে যৌন নিপীড়ন থেকে অনেকটা রক্ষা করবে! ~

লজ্জার হলেও সত্য হচ্ছে, কিছু পুরুষ আজীবন পুরুষ হয়েই থাকবে, মানুষ হবে না। নারী তার চোখ, মুখ সবকিছু বোরকা দিয়ে ঢেকে রাখলেও এইসব অমানুষদের দন্ডানুভূতিতে আঘাত হানবে আর নারীদের যৌন নিপীড়নের চেস্টা করে যাবে।

বাংলাদেশের মত নারীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যার্থ রাষ্ট্রগুলোতে এইসব অমানুষদের মোকাবেলা করতে হলে নারীদের অবশ্যই সেল্ফ ডিফেন্স মেকানিজম শিখতে হবে। স্কুল পর্যায় থেকেই প্রতিটা মেয়েকে কুংফু/ক্যারাটে/মার্শাল আর্টসে প্রশিক্ষন নিতে হবে যেন অমানুষগুলো ইট মারতে আসলে পাটকেল খেয়ে চিৎপটাং হতে হয়।

এসবের পাশাপাশি যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে সচেতনতা বাড়াতে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। যৌন নিপীড়কদের চিহ্নিত করে সামাজিকভাবে বয়কট করতে হবে।

সর্বোপরি, যৌন নিপীড়ন ও নারী নির্যাতনকে প্রতিরোধ করতে হলে নারীকে হয়ে উঠতে হবে পুরুষের সমকক্ষ - ঘরে ও বাইরে, মেধা ও মননে, এবং মানসিক ও শারীরিক শক্তিতে।

Monday, April 13, 2015

~ "ছুঁয়ে দিলে মন" চলচ্চিত্রটি সত্যিই আপনার মন ছুঁয়ে দিবে! ~

বাংলা চলচ্চিত্রে যে দৈন্য ভর করেছে, তা আর নতুন কোন খবর ন। দর্শকরা ভাল ছবির অভাবে প্রেক্ষাগৃহ থেক মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। দর্শকের অভাবে হল মালিকেরা হল বন্ধ করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। প্রযোজকরা চলচ্চিত্রে বিনিয়োগ করতে আস্থা হারিয়েছেন।

দেশীয় চলচ্চিত্রের এমন দুঃসময়েও কিছু তরুন অভিনেতা, অভিনেত্রী, পরিচালক, প্রযোজক বাংলা সিনেমাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য নিরন্তর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। এইসব তরুনদের প্রচেষ্টাকে সম্মান জানানোর ও বাংলা সিনেমাকে বাঁচিয়ে রাখার একমাত্র উপায় হচ্ছে নিজে ও বন্ধু-বান্ধবদের সাথে নিয়ে প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে সিনেমা দেখা।

গত ১০ এপ্রিল মুক্তি পাওয়া আরিফিন শুভ, জাকিয়া বারী মম ও ইরেশ যাকের অভিনীত, শিহাব শাহীন পরিচালিত ‘ছুঁয়ে দিলে মন’ ছবিটি দেখলাম। ছবিটি দেখার পর এককথায় মন্তব্য করতে বলা হলে বলতে হয় সত্যিই মুভিটি মন ছুঁয়ে দিয়েছে।

সিনেমাটিতে একদমই নতুন কিছু না থাকলেও অনেক কিছুই আছে প্রশংসা পাওয়ার মত।
ছবিটিতে বারবার একটা মজার ডায়ালগ শোনা যায় মিশা সওদাগরের মুখে, ‘প্রত্যেক জিনিসেরই কিছু ভালো দিক আছে, কিছু খারাপ দিকও আছে।’ ছুঁয়ে দিলে মন ছবিটিতে নিশ্চয়ই এই দুই দিকেরই উপস্থিতি আছে। তবে আমি শুধু ভালো দিকগুলোর কথাই বলব।

পাহাড়ি অঞ্চলের পটভূমিতে নজরকাড়া লোকেশন বাছাই করে পরিচালক মুনশিয়ানার পরিচয় দিয়েছেন।

মিষ্টি প্রেমের গল্পের এই ছবিতে রোমান্টিসিসম, সাসপেন্স, হাস্যরসের কোন অভাব ছিলনা। হাবিবের সংগীত পরিচালনায় চলচ্চিত্রটির সবগুলো গানই ছিল চমৎকার ও শ্রুতিমধুর। মুভিটির গানে আদিবাসীদের ঐতিহ্যবাহী নাচ সংযুক্তি নিঃসন্দেহে বাড়তি ফ্লেভার দিয়েছে।

আরেফিন শুভর অভিনয় দক্ষতা নিয়ে আমার কোন সন্দেহ ছিলনা। এর আগে সে একশন নির্ভর মুভিতে ভাল করলেও এই রোমান্স নির্ভর ছবিটিতেও যথারীতি সে চমৎকার অভিনয় করেছে। জাকিয়া মম'র অভিনয় সম্পর্কে কিছুই বলবনা কারন তার প্রতি আমার আগে থেকেই দুর্বলতা রয়েছে। :P

ছবিটিতে নতুনত্বের কথা বলতে গেলে বলতে হয়, ভিলেন চরিত্রের বাইরে গিয়ে মিশা সওদাগার তার দুলাভাই চরিত্রটি অসাধারনভাবে হাস্যরসের সাথে ফুটিয়ে তুলেছেন। ইরেশ যাকেরের নতুন গেট আপে ভিলেন চরিত্রে অভিনয়ও ছবিটিতে নতুনত্ব দিয়েছে।