Wednesday, November 26, 2014

অতীত সোনালী হলে বর্তমান কী?

If old is gold,  what will be the present?  আমাদের অনেকের কাছেই অতীত হচ্ছে এক সোনালী অধ্যয়।  আমরা সবসময় অতীতের সুখস্মৃতি রোমান্থন করতে পছন্দ করি। বর্তমান নিয়ে শত অভিযোগ অথচ অতীত নিয়ে কত উচ্ছলতা!  আহা! যদি আবার সেই অতীতে ফিরে যেতে পারতাম!

অতীত নিয়ে এই মোহগ্রস্ততা কেন? অতীতের জীবন অনেক সুন্দর ছিল তাই না বর্তমানের প্রাপ্তি নিয়ে হতাশা? নাকি পূজিবাদি সমাজের যান্ত্রিক সভ্যতার চাপে নিজেকে হারিয়ে ফেলা?

অতীত আসলে কী? অতীতের কি কোন তাৎপর্য আছে? আমার কাছে অতীত কিছু অভিজ্ঞতার সমষ্টি ছাড়া আর কিছু নয়।

Tuesday, November 25, 2014

মানুষ কি নিঃস্বার্থ নাকি স্বার্থপর?

মানুষ আসলে কী?  সে কি শুধুই স্বার্থপর জীব?  নাকি নিঃস্বার্থ মানবিক এক জীব? এককথায় এর উত্তর দেয়া প্রায় অসম্ভব। মানুষ আসলে কখনো নিঃস্বার্থ আবার কখনো স্বার্থপর আবার কখনো একসাথে দুটোই।

মানুষ নিঃস্বার্থ বলেই মা তার সন্তানকে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাকে ধারন করে, রাতের ঘুম ত্যাগ করে লালনপালন করে। সন্তানের সুন্দর ভবিষ্যত নিশ্চিত করার জন্য নিজের ব্যক্তিগত সুখ বিসর্জন দিয়ে দিন-রাত পরিশ্রম করে।

আবার মানুষ  স্বার্থপর বলেই বিপদের সময় প্রিয় মানুষের হাতে রাখা হাত ছেড়ে দিয়ে নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। হতে পারে তা কোন বৃহত্তর কোনো স্বার্থ রক্ষার নামে। এমনকি নিজের ব্যাক্তিগত/সামষ্টিক লাভ/সুখের জন্য অন্যের ক্ষতি হয় এমন কিছু করতেও পিছপা হয়না।

মানুষ স্বার্থপর বলেই পুঁজিপতি পুঁজিবাদী সমাজে বসবাস করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। ব্যক্তিগত উন্নতির জন্য সে শুধু সর্বাধিক লাভ করতে চায়। আর তাতে সমাজের কার কি ক্ষতি তা নিয়ে তার কোনো উদ্বেগ নাই।

আবার মানুষ নিঃস্বার্থ বলেই ডঃ ইউনুস পুঁজিবাদি সমাজে সামাজিক ব্যাবসা চালু করার সপ্ন দেখে। গরীবের বন্ধু কার্ল মার্ক্স সমাজতন্ত্র/সাম্যবাদী সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য বিপ্লবী কলম ধরে। চে গুয়েভারার মত বিপ্লবীরা নিজের জীবন বিলিয়ে দেয় মানবতার মুক্তির জন্য।

মানবসমাজে এই যে দ্বন্দ্ব তা আসলে চিরন্তন।  প্রকৃতপক্ষে, সব কিছুর মধ্যেই এই দ্বান্দ্বিক প্রবণতা বিদ্যমান।  হেগেল সাহেবের মতে সমাজের মধ্যে এই দ্বন্দ্ব সদা বিরাজমান থাকলেও তা সমগ্রতার ভিতর একপ্রকার ঐক্য সৃষ্টি করে প্রগতির দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়। যেমন পুঁজিবাদি সমাজে শ্রমিক-মালিক দ্বন্দ্ব থাকলেও তাদের মধ্যে একধরনের  অদৃশ্য ঐক্য রয়েছে; যার ফলে পুঁজিবাদি সমাজ ব্যাবস্থা টিকে আছে।

অন্যদিকে বিপ্লবী মার্ক্সের মতে সমাজের মধ্যে এই দ্বন্দ্ব দ্বয়ের পাশাপাশি শান্তিপুর্ন সহবস্থান সম্ভব নয়। মার্ক্সের মতে এই দ্বন্দ্বই সমাজকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়। যেমন সামন্ত সমাজে সামন্ত প্রভু ও ভূমিদাসদের মধ্যকার দ্বন্দ্বের ফলেই পুঁজিবাদি সমাজ ব্যাবস্থার উদ্ভব হয়। একই ভাবেই পুঁজিবাদি সমাজে শিল্পপতি ও শ্রমিক শ্রেণীর দ্বন্দ্বের ফলেই সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে।