Sunday, March 22, 2015

এলোমেলো ভাবনা (৪)

(১) হতাশাকে কখনো প্রশ্রয় দিতে হয় না। একেবারে শিকড় সহ উপড়ে ফেলতে হয়। প্রশ্রয় পেলে হতাশা মানুষকে ধীরেধীরে সেল্ফ ডেসট্রাকশন বা মৃত্যুর দিকে নিয়ে যায়।

(২) ঘন্টা প্রতি আয়ের পরিমানই নির্ধারণ করে দিবে নারী ও পুরুষের মধ্যে কে ঘরে আর কে ঘরের বাইরে কাজ করবে।

(৩) সবচেয়ে বড় হতভাগ্য হচ্ছে সেই ব্যাক্তি যাকে তার জীবনের বেশিরভাগ সময় অপছন্দের বিষয়ের সাথে কাটাতে হয়।

(৪) বাংলাদেশের মত সমাজে উচ্চ শিক্ষিত ও অধিক যোগ্যতাসম্পন্ন মেয়েদের অপেক্ষাকৃত কম শিক্ষিত ও কম যোগ্যতা সম্পন্ন ছেলেদের বিয়ে করার সম্ভাবনা বেশি।

(৫) ধর্ম রক্ষা, জাতি রক্ষার নামে ব্যক্তি অধিকার হরণ, ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ সভ্য সমাজে কাম্য হতে পারে না। মনে রাখতে হবে, সমাজের জন্য মানুষ না; বরং মানুষের জন্যই সমাজ।

(৬) সবকিছুকে ফাঁকি দেয়া গেলেও নিজের বিবেককে কিন্তু কখনো ফাঁকি দেয়া যায় না।

(৭) যে অর্থনৈতিক উন্নয়ন দেশের সমগ্র জনগোষ্ঠীকে স্পর্শ করতে পারে না, তাদের জীবন-যাপনের মান উন্নত করতে পারেনা তাকে সত্যিকারের উন্নয়ন বলা যায় না।

(৮) মানুষ বেশিরভাগ প্রশ্ন করে উত্তর জানার জন্য না; বরং উত্তর দেয়ার জন্য।

(৯) মানব জীবনের ইতিহাস হচ্ছে পরিবর্তনের ইতিহাস। মানব জীবনে ধ্রুব বা অপরিবর্তিত বলতে যদি কিছু থাকে; তাহলে সেটা হচ্ছে একমাত্র 'পরিবর্তন'।

(১০) আমাদের সমাজে মেয়ে ভাল নাকি খারাপ তা মাপা হয় মেয়েদের শরীর বিষয়ক ঘটনা দিয়ে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, নষ্ট হওয়ার একই কাজ ছেলে-মেয়ে উভয়ে করলেও ছেলেরা কখনো নষ্ট হয় না; নষ্ট হয় কেবল মেয়ে!

Saturday, March 21, 2015

বুদ্ধিজীবিদের পরিচয় কি?

বুদ্ধিজীবি কারা? বুদ্ধিজীবিদের পরিচয় কি? বুদ্ধিজীবিদের উদ্দেশ্য ও দায়িত্ব কী হতে পারে?

বুদ্ধিজীবিরা কি শুধুই কোন বিশেষ গোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষায় নিয়েজিত নাকি সমাজের প্রতি তাদের কোন বৃহত্তর দায়িত্ববোধ রয়েছে?

এডওয়ার্ড সাইদের মতে, বুদ্ধিজীবি হচ্ছেন সেই ব্যক্তি, সাধারন জনগনের কাছে যার গ্রহনযোগ্যতা আছে এবং যিনি সিদ্ধান্ত গ্রহনের জন্য একান্ত নিজের উপরই নির্ভর করেন। বুদ্ধিজীবি হবেন সেই ব্যাক্তি যিনি জাতীয়তাবাদ এবং কর্পোরেট বিষয়গুলোকে প্রশ্নবিদ্ধ করবেন।

বুদ্ধিজীবিদের কোন দলীয় সংশ্লিষ্টতা, জাতীয় প্রেক্ষাপট ও আদ্যকালীন আনুগত্যতা থাকতে পারে কিন্তু তার কাছে মানুষের দুর্দশা ও শোষন সম্পর্কে সত্যের মানদণ্ড একই থাকবে।

বুদ্ধিজীবিদের অন্যতম কাজ হচ্ছে তথাকথিত চালচলন এবং খন্ডিত বিষয়গুলোর সনাতনী দৃষ্টিভঙ্গি ভেংগে ফেলা। সর্বপরি, বুদ্ধিজীবিদের প্রধান কাজ হচ্ছে 'ক্ষমতার প্রতি সত্য ভাষন' অর্থাৎ মানুষের দুঃখ, দুর্দশা ও যাবতীয় শোষনের বিরুদ্ধে উচ্চকন্ঠে কথা বলা, যদিও তাকে সেজন্য ক্ষমতাসীনদের বিরাগভাজন হতে হয়।

বাংলা ভাষা টিকিয়ে রেখেছে কারা?

জাতীয় অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক স্যারের মতে বাংলা ভাষাটা টিকিয়ে রেখেছে চাষাভুষা, দিনমজুর (গার্মেন্টস শ্রমিক) লোকেরা। এরা বাংলায় কথা বলে দেখেই এদেশের কবিরা বাংলায় কবিতা লেখে। সংস্কৃত কিংবা ল্যাটিন ভাষায় কেউ কথা বলেনা দেখেই কেউ এখানে সংস্কৃত কিংবা ল্যাটিন ভাষায় সাহিত্য লেখেনা।

আধুনিক বা প্রমিত বাংলা বংগসন্তানের ঠিক মুখের ভাষা না, লেখপড়া শিখে প্রাপ্ত বয়স্ক হলেই কেবল ঐ ভাষাটা তার মুখে আসে।

আর এই কারোনেই কি জাতীয় অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক স্যার সবসময়, সবজায়গায় নিজের আঞ্চলিক ভাষা "ঢাকাইয়া" একসেন্টে কথা বলতেন?

বাঙালি সংস্কৃতির সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অভিন্ন উপাদান কী?

শত বৈচিত্র্য সত্ত্বেও বাঙালি সংস্কৃতির যেসব অভিন্ন উপাদান রয়েছে, তাদের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুটো উপাদান হল:

১। বাংলা ভাষা - ধর্ম, সমাজের ভিন্নতা সত্ত্বেও সকল বাঙালি বাংলা ভাষায় কথা বলে।
২। খাদ্যাভ্যাস - বিশ্বায়নের এই যুগেও বাঙালি হট-ডগ, চাইনিজ, কোক ইত্যাদি খেলেও ভাত এবং মাছ এখনো সকল বাঙালির প্রধান খাদ্য।

এছাড়াও, বাঙালির সাহিত্য, সংগীত, বাড়িঘড়ের প্রকরণ, পোশাক-আশাক, এমনকি চেহারা ও স্বভাবে লক্ষযোগ্য মিল রয়েছে।

বাঙালি সংস্কৃতির সূচনা কখন থেকে ধরতে হবে?

বাঙালি সংস্কৃতির সূচনা কখন হয়েছিল সেটা জানতে হলে আমাদের দুটো বিষয়কে বিবেচনা করতে হবে।

(১) বাংলা ভাষার জন্ম - সমাজের ভিন্নতা সত্ত্বেও সকল বাঙালির ভাষা বাংলা। তাই যখন থেকে বাংলা ভাষার উন্মেষ, তখন থেকেই বাঙালি সংস্কৃতির সূচনা।

(২) বাঙ্গালা নামক অঞ্চলের উৎপত্তি - সংস্কৃতির একটা স্থানিক মাত্রা বা পরিচয় আছে। যে অঞ্চলের লোকেরা বাংলায় কথা বলে, বাঙালি সংস্কৃতি সে অঞ্চলের।

তাই, যখন থেকে বাংলা ভাষা এবং বাঙ্গালা নামক অঞ্চলের জন্ম হল, তখন থেকেই বাঙালি সংস্কৃতির সূচনা ধরতে হবে।

Wednesday, March 18, 2015

এলোমেলো ভাবনা (৩)

(১) ব্যাক্তি জীবনে সুখী হওয়ার প্রধান বাঁধা হচ্ছে কারো প্রতি "প্রত্যাশা" আর "অধীকারের দাবী"। এ দুটো জিনিস থেকে মুক্ত হতে পারলে সুখী হওয়ার পথে আর কোন বাঁধা থাকেনা।

(২) মানুষ বড়ই অদ্ভুত। এরা কেউ কাউকে সত্যিকারভাবে বুঝতে চায় না। তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে, এদের সকলেই প্রত্যাশা করে যেন অন্যরা তাকে বোঝে, তার অভিমানকে গুরুত্ব দেয়।

(৩) পুঁজিবাদী রাষ্ট্রের কাজই হচ্ছে গরীবদের বঞ্চিত করা ও শাস্তি দেয়া আর ধনীদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

(৪) আধুনিক যুগে প্রেম হয় শরীরে- শরীরে, ক্যারিয়ার আর রুপে, টাকা আর গায়ের রংয়ের সৌন্দর্যের সাথে।

(৫) সবার মধ্যেই বিশেষ কিছু গুণ বা সৌন্দর্যময় দিক আছে কিন্তু সেটা সবাই দেখতে পায় না।

(৬) কোন কিছু অর্জন করার পরে সেটা ধরে রাখতে পারাটাই হচ্ছে আসল অর্জন।

(৭) 'প্রেম-ভালোবাসা' এমন কোন সফটওয়্যার না যেটা চাইলেই যখন ইচ্ছা ইন্সটল বা আনইন্সটল করে নেয়া যায়।

(৮) 'প্রেম-ভালবাসা' হচ্ছে সংক্রামক ভাইরাসের মত। এতে যেকেউ যেকোন সময় আক্রান্ত হতে পারে।

(৯) আবেগ মানুষকে সাহসী করে, ভয় ডর দুর করে দেয়। প্রতিক্রিয়া নিয়ে বেশি ভাবতে দেয় না।

(১০) জ্ঞান, বুদ্ধি ও নৈতিকতায় উন্নত মানুষের জন্য আইন কানুন বা ধর্মের প্রয়োজনীয়তা নাই। কেননা সে জানে, তার কী করা উচিত আর কী করা উচিত না।

Wednesday, March 11, 2015

~ স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কে ঘরে আর কে ঘরের বাইরে কাজ করবে? ~

ঘন্টা প্রতি আয়ের পরিমানই নির্ধারণ করে দিবে নারী ও পুরুষের মধ্যে কে ঘরে আর কে ঘরের বাইরে কাজ করবে।

অর্থাৎ নারী যদি পুরুষের চেয়ে বেশি আয় করে, তাহলে নারী ঘরের বাইরে চাকরি বা কাজ করবে আর পুরুষ ঘরে থেকে শিশু পালন, রান্নাবান্না ও ঘরের কাজ করবে।

অন্যদিকে, নারী-পুরুষ দুজনের আয় সমান হলে অথবা উভয়ে চাইলে দুজনই বাইরে কাজ করতে পারে। তবে সেক্ষেত্রে নারী-পুরুষ উভয়কেই ঘরের কাজ শেয়ার করে করতে হবে।

Saturday, March 7, 2015

~ সাইকোলজিস্ট ও সাইকিয়াট্রিস্টের মধ্যে পার্থক্য কী? ~

সাইকোলজিস্ট ও সাইকিয়াট্রিস্ট দুজনই মানাসিক রোগ বিশেষজ্ঞ। এদের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে, সাইকিয়াট্রিস্ট হতে হলে তাকে অবশ্যই মেডিকেল ডিগ্রি নিতে হয় অর্থাৎ ডাক্তার হতে হয়। আর সাকোলজিস্ট হতে হলে মেডিকেল ডিগ্রি নিতে হয় না, কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাইকোলজি সাবজেক্টে অনার্স/মাস্টার্স ডিগ্রি নিলেই হয়।

আরেকটি পার্থক্য হচ্ছে, সাইকিয়াট্রিস্ট ঔষধ প্রেসক্রাইব করতে পারবে কিন্তু সাইকোলজিস্টের ঔষধ প্রেসক্রাইব করার অনুমতি নাই। তবে সে কাউন্সেলিং সেবা দিতে পারবে।