Thursday, December 4, 2014

সেক্যুলারিজম কি?

ইউরোপীয় রেনেসাঁর আগে খ্রীস্টান ধর্মাবলম্বীরা মনে করত, মৃত্যুর পর যে অনন্ত জগৎ অপেক্ষা করছে সেটাই আসল জীবন। দুনিয়ার জীবন তার এপেনডেজ বা আনুষংগিক বস্তু মাত্র।

খ্রীস্টানদের শিল্প সাহিত্য সবখানেই পরকালের মহিমাকীর্তন করা হত। যীশুখ্রীস্টতো এই নশ্বর পৃথিবীকে ভেল অব টিয়ার্স বলে গেছেন।

এই দৃষ্টিভংগি একদিনে,  একমাসে, একবছরে পাল্টায় নাই; অনেকদিন লেগেছে। রেনেসাঁর ফলে এই দৃষ্টিভংগিটা পাল্টে গেল। রেনেসাঁর আগে পরকালই ছিল সব। রেনেসাঁর পরে এই দুনিয়াটা ই সব, পরকাল কিছুই না। সংক্ষেপে বলতে গেলে এই পরিবর্তিত দৃষ্টিভংগি অর্থাৎ পরকাল কে বাদ দিয়ে শুধুমাত্র ইহকাল কেন্দ্রিক চিন্তাভাবনাই হচ্ছে সেক্যুলারিজম।

মজার ব্যাপার হচ্ছে, ইসলাম ধর্মের সাথে সেক্যুলারিজনের কিছুটা হলেও সাদৃশ্য আছে, অন্তত অন্যান্য ধর্মের তুলনায়। ইসলাম এমন একটা ধর্ম, যেখানে পরকালের সাথে সাথে ইহকালের ও গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।

ইসলাম ধর্মের সাথে অন্যান্য ধর্মের একটা গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য হচ্ছে, এখানে পরকালের গুরুত্ব স্বীকার করা হয়েছে,  সাথে ইহকালের গুরত্বও অস্বীকার করা হয় নাই। ফিদ্দুনিয়া ওয়াল আখিরাহ অর্থাৎ ইহকাল ও পরকালের গুরুত্বের কথা ইসলামে যেভাবে বলা হয়েছে,  অন্যান্য ধর্মে সেভাবে বলা হয় নাই।

আদি ধর্ম সমূহে ইহকালকে নয় শুধুমাত্র পরকালকেই আসল জীবন হিসেবে গুরুত্ব দেয়া হত। তুলনামূলকভাবে ইসলাম সাম্রতিক ধর্ম হওয়ায় এতে পরকালের সাথে ইহকালেরও গুরুত্ব স্বীকার করা হয়েছে। বিবর্তনের ধারায় যদি নতুন কোন ধর্মের আবির্ভাব হয়, তাহলে কি সেই ধর্মে পরকালের গুরুত্ব হ্রাস ও  ইহকালের গুরুত্ব আরো বেড়ে যাবে? নাকি প্রচলিত ধর্ম সমূহ টিকে থাকার জন্য হলেও ধর্মের সেক্যুলারাইজেশান হবে।

No comments:

Post a Comment