আধুনিক যুগ বিজ্ঞানের যুগ। মানুষ এই যুগে সবকিছুকে বিজ্ঞানের আলোকে দেখতে চেস্টা করে। সবকিছুর পিছনের কারন খুঁজে বের করতে চায়। কিন্তু আধুনিক বিজ্ঞানের এই জয়জয়াকারের যুগেও ধর্ম এখনো তার স্বমহিমায় টিকে আছে। এর কারন কী?
সমাজবিজ্ঞানীরা ধর্ম টিকে থাকার পিছনে তিনটি প্রধান কারন খুঁজে বের করেছেন।
(১) কিছু অজানা বিষয়ের রহস্য বের করতে না পারা।
(২) মৃত্যুকে ঠেকাতে ব্যার্থ হওয়া।
(৩) ভবিষ্যৎ সম্পর্কে অনিশ্চয়তা।
মানুষ একসময় ঝড়-বৃষ্টিকে মানুষের পাপ-পূণ্যের ফলাফল হিসেবে অতিপ্রাকৃত শক্তি বা স্রষ্টার শাস্তি-রহমত হিসেবে দেখতো। কিন্ত আধুনিক বিজ্ঞান প্রমান করে দেখিয়েছে ঝড়-বৃষ্টি একটা স্বাভাবিক প্রাকৃতিক ঘটনা। বায়ুর তাপমাত্রা-পানিচক্র ইত্যাদির প্রভাবের কারনে ঝড়-বৃষ্টি হয়, মানুষের পাপ-পূণ্যের কারনে নয়।
কিছুদিন আগেও (অবশ্য এখনো) ভূমিকম্পকে মানুষের পাপের শাস্তি হিসেবে স্রস্টার গজব হিসেবে দেখা হত। অথচ বিজ্ঞান দেখিয়েছে ভূমিকম্প আমাদের পৃথিবীর বিশেষ অভ্যন্তরীণ গঠন বা ভূ-অভ্যন্তরস্থ ফাটলের কারনে হয়, কোন নির্দিষ্ট এলাকার মানুষের পাপের শাস্তির ফলাফল হিসেবে না।
যদিও আধুনিক বিজ্ঞান অনেক অতিপ্রাকৃত রহস্যময় ঘটনাকে স্বাভাবিক প্রাকৃতিক ঘটনা হিসেবে ব্যাখ্যাসহ প্রমান করে দেখিয়েছে। এতদসত্বেও কিছু ঘটনা আছে যেগুলোর ব্যাখ্যা আধুনিক বিজ্ঞান এখনো দিতে পারে নি। তাই যতদিন বিজ্ঞান এই সকল বিষয়ের সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা বা সমাধান দিতে না পারবে, ততোদিন পর্যন্ত হয়ত সমাজে ধর্ম টিকে থাকবে।
তবে এটাও উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, বিজ্ঞান কোন স্থির বিষয় নয়, এটা একটা চলমান প্রক্রিয়া। বিজ্ঞান একসময় অনেক ঘটনারই ব্যাখ্যা দিতে পারতো না কিন্তু এখন সে অনেক বিষয়ের ব্যাখ্যা দিতে পারে।
তাই বিজ্ঞান এখন যেসব বিষয়ের ব্যাখ্যা দিতে পারেনা, ভবিষ্যতেও যে তা পারবে না তা কিন্তু বলা যায় না। হয়তোবা, সময়ের সাথে সাথে আমরা এমন অনেক কিছু জানবো, যা কেউ ভাবেতেই পারে নাই আগে।
#SociologyOfReligion
No comments:
Post a Comment